তারুণ্যের জয়গান তাঁর সৃষ্টিতে। প্রকৃতিতে মানুষ তাঁর কাছে বিস্ময়। তাঁর লেখায় তাই নিরন্তর জীবনঘনিষ্ঠ। তিনি আহমাদ মোস্তফা কামাল। ২০১৩ সালে বাংলাদেশি নভেলস-এর পক্ষে আমরা তাঁর মুখোমুখি হয়েছি। আহমাদ মোস্তফা কামালকে আমরা আরও ভাল করে জানব তাঁর কাছে থেকেই।
প্রশ্ন: বসন্তের শুভেচ্ছা।
আহমাদ মোস্তফা কামাল: ধন্যবাদ। আপনাকেও শুভেচ্ছা।
প্রশ্ন: গ্রন্থমেলা ২০১৩-তে প্রকাশিত আপনার বই সম্পর্কে জানতে চাই প্রথমেই।
আহমাদ মোস্তফা কামাল: এবার আমার চারটি গ্রন্থ এসেছে। এরমাঝে দু’টি উপন্যাস। প্রথমটি ‘বর্ষামঞ্জরী’। এসেছে শুদ্ধস্বর থেকে। দ্বিতীয়টি ‘অন্য কোথাও, অন্য কোনখানে’। এটি প্রকাশিত হয়েছে সন্দেশ থেকে। এছাড়া নান্দনিক থেকে এসেছে ছোটগল্প সংকলন ‘একলা থাকার গল্প’ এবং শুদ্ধস্বর থেকে প্রবন্ধ ‘বাংলা গল্পের উত্তরাধিকার’।
প্রশ্ন: গ্রন্থগুলো নিয়ে যদি কিছু বলতেন?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: ‘বর্ষামঞ্জরী’ একটি রূপকথা। একালের রূপকথা। বর্তমান সমাজের রূপক। উপন্যাসটি বিদ্রুপাত্মক হলেও গভীর প্রেমের। ‘অন্য কোথাও অন্য কোনখানে’ একটি প্রেমের উপন্যাস। এটি প্রাপ্তমনস্কদের প্রেমের উপন্যাস। আবার বলছি, এটি প্রাপ্তবয়স্ক নয়, প্রাপ্তমনস্কদের উপন্যাস। প্রাপ্তমনস্ক বলতে আমি তাদেরকেই বোঝাচ্ছি, যাদের মন পরিপূর্ণতা পেয়েছে। অনেককেই দেখা যায় বয়স বেশি হলেও মন পূর্ণতা পায় না। আবার অনেকের অল্প বয়সেই মন পরিণত হয়ে যায়। এই উপন্যাস তাদের জন্যই, যাদের মন পরিণত। আর ‘একেলা থাকার গল্প’ গ্রন্থটাতে নিঃসঙ্গ মানুষদের জীবন তুলে আনার চেষ্টা করেছি। এবং ‘বাংলা গল্পের উত্তরাধিকার’ হল আমার বিশ বছর ধরে বাংলা গল্পের আগাগোড়া সন্ধান করার একটি প্রয়াস।
প্রশ্ন: আপনার প্রথম গ্রন্থ সম্পর্কে যদি কিছু বলেন?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: ‘দ্বিতীয় মানুষ’ আমার প্রথম উপন্যাস। এটি ১৯৯৮ সালে গল্পসংকলন থেকে প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন: আপনার সবচেয়ে আলোচিত গ্রন্থ কোনটি?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: ‘আগন্তুক’ বেশ আলোচিত। ‘অন্ধ জাদুকর’-এর জন্য আমি ‘এইচএসবিসি কালি ও কলম পুরস্কার’ পেয়েছি। এছাড়া ‘কান্নাপর্ব’ উপন্যাসটিও বেশ আলোচিত।
প্রশ্ন: আপনার পরবর্তী ভাবনা সম্পর্কে যদি বলেন…
আহমাদ মোস্তফা কামাল: আমি সবসময়ই লেখার মাঝে থাকি। যখন মন যেমন থাকে, তখন তেমন লিখি। মানুষের মন পরিবর্তনশীল। তাই লেখার ক্ষেত্রে আমি মনের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। একারণেই এখন কিছু বলতে পারছি না।
প্রশ্ন: প্রকৃতির কোন উপাদানটি আপনাকে চমৎকৃত করে, ভাবায়?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: মানুষ।
প্রশ্ন: আপনার প্রিয় সময়?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: প্রিয় ঋতু হেমন্ত। প্রিয় সময় সন্ধ্যা।
প্রশ্ন: এবারের গ্রন্থমেলা নিয়ে আপনার মতামত?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: গ্রন্থমেলা সবসময়ই জমজমাট ছিল, এবারও হবে।
প্রশ্ন: প্রজন্ম চত্বর নিয়ে আপনার অভিব্যক্তি বলুন।
আহমাদ মোস্তফা কামাল: মনে হচ্ছিল, এই প্রজন্মের তরুণরা জাগতে জানে না। কিন্তু তারা এ কথা ভুল প্রমাণ করেছে. নিজেরা জেগেছে, সারাদেশকে জাগিয়েছে। এবং এই কাজ একমাত্র তরুণদের পক্ষেই সম্ভব।
প্রশ্ন: তরুণদের প্রতি আপনার বার্তা বলুন?
আহমাদ মোস্তফা কামাল: তরুণরা যেন তরুণদের মতই থাকে, ঘুমিয়ে যেন না পড়ে।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ আপনাকে এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য।
আহমাদ মোস্তফা কামাল: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: রাজিউল হাসান
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ; ১ ফাল্গুন, ১৪১৯ বঙ্গাব্দ