বরুণ কুমার বিশ্বাস
কানাডায় থাকা বাঙালিরা একুশে বইমেলাতে সবসময়ই দৃপ্ত উপস্থিতির প্রকাশ ঘটান। সেই উপস্থিতি প্রবন্ধসাহিত্য বা কথাসাহিত্যে যেমন টের পাওয়া যায়, কবিতার ক্ষেত্রেও কম যায় না। কানাডার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত যে শতাধিক পাবলিস্টড লেখক রয়েছেন তাঁর মধ্যে অন্তত পঞ্চাশ জন রয়েছেন কবি যাঁদের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ রয়েছে। কবিতায় এ পর্যন্ত বাংলা একাডেমি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পুরস্কার পেয়েছেন কানাডার দুজন কবি – একজন সম্প্রতি প্রয়াত ইকবাল হাসান, অন্যজন মাসুদ খান।
এবছর প্রকাশিত হয়েছে কানাডীয় বাঙালি কবি রাকীব হাসানের কাব্যগ্রন্থ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাঙালি চিত্রকর হিসেবে রাকীব হাসান যথেষ্ঠ সুনাম কুড়িয়েছেন। বিভিন্ন দেশে ছবির প্রদর্শনী করে তিনি খ্যাতিমান। এবছর বইমেলায় এসেছে তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘কয়েকটি অক্ষর শব্দ করে’। প্রকাশক জলধি প্রকাশনা (স্টল ৭৫)।
এবছর আরও প্রকাশিত হয়েছে ভ্যাঙ্কুভারে অভিবাসী বাঙালি কবি নীনা হাসেল রচিত ‘দুহাতে ধরে রেখো বৃষ্টি’। প্রকাশ করেছে বাংলা ধরিত্রী (স্টল নম্বর ২৮৮)। এছাড়া টরন্টোর কবি হিমাদ্রী রায়ের কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমের নকশিকাঁথা’ প্রকাশ করেছে দোয়েল পাবলিশারস (৪৪৫, ৪৪৬ ও ৪৪৭ স্টল)। শিউলী জাহানের ‘পরিব্রাজক হয়ে উঠি প্রতিদিন’ প্রকাশ করেছে অনুভব প্রকাশনী (স্টল নম্বর ৫৫২)। ‘আপাতত জীবনের কিছু টুকরো’ কাব্যগ্রন্থের কবি সায়েদা ফাতেমা। প্রকাশ করেছে এশিয়া পাবলিকেশন (মেলায় স্টল নম্বর ২৫-২৮)।
কানাডার টরন্টোতে বর্তমান সময়ে যেই তিন লেখক যথেষ্ঠ আলোচনায় রয়েছেন তাঁরা হলেন রোকসানা পারভীন শিমুল, কাজী হেলাল এবং মোস্তফা হক। প্রতি বছর নতুন নতুন বই নিয়ে তাঁরা হাজির হচ্ছেন পাঠকের দরোজায়। অভিনন্দিত হয়ে চলেছেন নতুন নতুন ভাবে।
এবারের বইমেলায় রোকসানা পারভীন শিমুলের ‘বুকপকেটে চাবি’ নামের কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। পাওয়া যাচ্ছে নৃ প্রকাশনের ৫৬৩ নম্বর স্টলে। গতবছর প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর ছোটগল্পের বই।
কাজী হেলাল রচিত ‘বুকের গহীনে ডেলফিনিয়াম’ প্রকাশিত হয়েছে শব্দশৈলী (প্যাভিলিয়ন নাম্বার ০৯) থেকে। মোস্তফা হকের ‘সিজোফ্রেনিয়া’ প্রকাশ করেছে প্রসিদ্ধ পাবলিশার্স (স্টল ৪৯২-৪৯৩)।
সাম্প্রতিক সময়ে কানাডার সাহিত্যের অনুবাদে এগিয়ে এসেছেন কোনো কোনো বাঙালি। ২০১৯ সালে লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাসের ‘কানাডীয় সাহিত্য বিচ্ছিন্ন ভাবনা’ শিরোনামের গ্রন্থটি প্রকাশের পর এমন কাজে অনেকেকেই আগ্রহী হতে দেখা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় টরন্টো শহরের প্রাক্তন পোয়েট লরিয়েট অধ্যাপক এ এফ মরিৎজের কবিতা অনুবাদ করেছেন মম কাজী।
বাংলাদেশি নভেলসের উদ্যোক্তা টরন্টোপ্রবাসী সুব্রত কুমার দাস ফেসবুকে তাঁর এক পোস্টে লিখেছেন, “টরন্টোতে তরুণ বয়েসী যে ক’জন নিয়মিত বাংলা ভাষায় লেখালেখি করেন, মম তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য। গত ছয়-সাত বছর একসাথে বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে করতে মম’র মনে ইচ্ছে জাগে কানাডার সাহিত্য থেকে অনুবাদ করার। বেছে নেন আমাদের পূর্বপরিচিত কবি কানাডার টরন্টো শহরের প্রাক্তন পোয়েট লরিয়েট অধ্যাপক এ এফ মরিৎজ-কে। অপ্রচল কাব্যবোধের কবি মরিৎজের ভাবনাকে বাংলা ভাষায় রূপ দিতে থাকেন একের পর এক। সবশেষে দীর্ঘ শ্রমের সেই পাণ্ডুলিপি আমার টেবিলে আসে ভালোবাসার ছোঁয়া পেতে। এই গ্রন্থ কানাডার মূলধারার সাহিত্যিকদের সাথে আমাদের যে সেতু-নির্মাণ প্রয়াস, সেই প্রয়াসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।“
কানাডায় অভিবাসী কবি ও লেখক রোকসানা লেইস আরেক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আমি খুবই অবাক হয়েছি মমর শব্দ প্রয়োগ দেখে। যতদূর জানি মম অনেক দিন থেকে বাংলাদেশের বাইরে আছেন এবং কানাডায় ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেখা করেছেন। অনেক অল্প বয়স থেকে দেশ থেকে দূরে অবস্থান করছেন। তারপরও ওর শব্দচয়ন অনেক সমৃদ্ধ। ও সাহিত্য ভুলে যাননি। ভাষার প্রতি ভালোবাসাই ওকে সুন্দর সাহিত্যের ভাষার প্রতি নিয়োজিত রেখেছে আমি মনে করি।“
তিনি আরও লিখেছেন, “বইটি পড়তে শুরু করার পর,আমি নিজেকে আর থামাতে পারলাম না এবং অবাক হয়ে মম কাজির ভাষা ছন্দ শব্দ ব্যবহারের সরবরে হলাম নিমজ্জিত। এবং এখন প্রতিদিন একটা দুটো কবিতা আবারো পড়ছি বারেবারে এবং ভালোলাগায় সমৃদ্ধ হয়ে আত্মস্থ করছি।“
‘চড়ুই’ বইটি প্রকাশ করেছে ঢাকার মূর্ধন্য প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন নন্দিত শিল্পী মোস্তাফিজ কারিগর। মেলায় বইটি রয়েছে মূর্ধন্য স্টলে। নম্বর ৬৩৩-৬৩৪।
সৌজন্যে : www.suryalaw.ca
1 Comments
রুমা বসু
এবার একুশের বইমেলায় কেনেডিয়ান লেখকদের মধ্যে আমার দুটো নতুন বই সহ মোট পাঁচটা বই ছিল। আমি অটোয়া থেকে রুমা বসু।
আমার বইগুলোঃ
এবার বইমেলায় ৯৪টা সনেট নিয়ে “চতুর্দশপদী পঙ্তিমালা” নামে একটি বই সপ্তর্ষী প্রকাশনা থেকে বের হয়েছে। বই মেলার ৬৮ স্টল নাম্বারে বইটি পাবেন।তাছাড়া রকমারীতেও বইটি পাবেন নীচের লিংকে-
https://www.rokomari.com/book/372524/choturdoshpodi-ponkgtimala
“বোধের ভাঙা গড়া” দেশ পাবলিকেশন্সের স্টল নং ৪৭৮- ৪৮০ তে পাওয়া যাবে। রকমারীতেও বইটি পাবেন নীচের লিংকে-
https://www.rokomari.com/book/283719/bodher-vanga-gorha
চলতি পথের টুকরো টাকরা দেখা ঘটনার গল্প নিয়ে “ডায়েরির ধূসর পাতা” পাওয়া যাবে বাবুই প্রকাশনীর স্টল নং ২৬২ এবং ২৬৩ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। রকমারীতেও বইটি পাবেন নীচের লিংকে-
https://www.rokomari.com/book/280383/daiyrer-dhusor-pata
“হিয়া” একটি নিরব সংগ্রামী নারীর কাহিনী। এমনই এক নারীর গল্প নিয়ে ২০২১ এ প্রথম উপন্যাস “হিয়া” বের হয়ে ছিল ক্লাব ৮৫ পাবলিকেশন্স থেকে। এবার আবার সেই একই পাবলিকেশন্স থেকে বের হচ্ছে শিশুতোষ স্বপ্নের ছড়ার বই “স্বপ্নে ছন্দে বাংলা”। দুটো বইয়ের প্রচ্ছদ করেছে আমাদের দুই বন্ধু- উপন্যাসটি মামুন কবীর ধীমান ও ছড়ার বইটি আবু সালেহ টিটু।
বই দুটো পাওয়া যাবে হাজারো প্রাণের ঐকতান নামক স্টলে, এটি ক্লাব ৮৫ পাবলিকেশন্সের। আর স্টল নম্বর: ৭৭৭
এটির অবস্থান বাংলা একাডেমি চত্বরে (বর্ধমান হাউসের পিছনে, পোস্ট অফিসের পাশে। আগের লিটন ম্যাগাজিন চত্বর)।
রকমারীতেও বই দুটো পাবেন।
বই পড়ুন, বই কিনুন, প্রিয়জনকে বই উপহার দিন।