কাজী রাফির লেখার মাঝে আমি প্রতিভার স্বাক্ষর পাই। কালি ও কলম পুরস্কারের চূড়ান্ত পবের্র একজন বিচারক হিসাবে, আমি তার প্রথম উপন্যাস ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। খুব মুগ্ধ হয়েছিলাম। এই লেখকের নাম আগে কোনোদিন তো শুনিনি। তার লেখাও পড়িনি। সেই উপন্যাসটা পড়ার দেড় বছর পর গ্রন্থটার (ধূসর স্বপ্নের সাসান্দ্রা উপন্যাসের) জন্য আমি কিছু প্রস্বস্তি বাক্য রচনা করেছিলাম। যেভাবেই হোক তার কিছু ফল হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, ঐ বইটি পুরস্কৃত হয়েছে বলে এই বইটি (ত্রিমোহিনী) লেখা হয়েছে। এটা আমি বুঝতে পারছি যে, লেখককে অনুপ্রাণিত করেছে পুরস্কার, তাকে এটা বুঝিয়েছে যে, তুমি তোমার কাজ নিয়ে এগিয়ে যাও, আমরা তোমার পেছনে আছি। পুরস্কার সব সময় লেখকের মাথায় থাকে না, প্রতিভাবান লেখকের পুরস্কার থাকে পায়ের তলায়। আমরা লেখকদের চার শ্রেণিতে বিভাজন করতে পারি। লেখক হতে হলে লেখায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে অর্থাৎ এই শ্রেণির লেখকদের দক্ষ লেখক বলা যায়। দক্ষতার সাথে যারা উত্তরসূরির কাছে বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শন করেন তাদেরকে বলা যায় ক্লেভার রাইটার। আর যারা তাদের লেখায় সময়কে মনুষ্য এবং মানুষের অনুভূতিকে ধারণ করতে পারেন তাদেরকে ইন্টেলিজেন্ট বলা যেতে পারে। তার চাইতেও যারা উপরে তাদেরকে ট্যালেন্টেড রাইটার বলা যায়। কিন্তু যাদের মতন আর কেউ হয় না, তাদেরকে বলে জিনিয়াস। আমি আজ প্রথমেই ঘোষনা করে দেই যে, ঔপন্যাসিক হিসেবে বাংলাদেশে এবং বর্তমান বাংলা সাহিত্যে একজন জিনিয়াসের আবির্ভাব ঘটেছে। সেই জিনিয়াসের নাম কাজী রাফি।
লেখকের মাথা কখনোই নত হবে না। যিনি লেখক তার মাথা কিছুতেই নত হয় না। আর নত না হওয়াই হচ্ছে একজন লেখকের প্র্রধান গুণ। কাজী রাফি সেই ব্রত মেনে নিয়েছে এবং সে কোথাও নতি স্বীকার করেনি, হার কোথাও স্বীকার করেনি। কোথাও কম্প্রমাইজও করেনি। কখনও মনে করেনি যে, এটা করলে অমুক খুশি হবে। উচিৎ কথায় চাচি বেজার। উচিৎ কথা নিমের পাতা। উচিৎ কথা যদি নিমের পাতাও হয় তবে তোমাকে তা গিলতে হবে। তা না হলে তোমার জ্বর সারবে না। তো এই ব্রত নিয়ে কাজী রাফি সাহিত্যক্ষেত্রে নেমেছে।
আমি মনে করি কাজী রাফির ত্রিমোহিনী একটি মহৎ উপন্যাসের জায়গায় গিয়েছে। এটাকে একটা মহাকাব্যিক উপন্যাস বলা যায়। এটা সত্যিই এক মহাকাব্যিক উপন্যাস এবং এটাও ঠিক (উপন্যাসের) হোম ওয়ার্কে ইলিয়াস কী লিখেছিলেন তার কোনো প্রমাণ নেই, কারণ তিনি (উপন্যাসের খসড়ার প্রস্তুতি হিসাবে) কিছু লেখেননি। তিনি চারণ কবির মতো গান গেয়ে বেড়াতেন। আমি কিন্তু এরকম গায়ক দেখেছি। হারিদের মধ্যে, হারি মানে যাদের মহিলারা সন্তান প্রসব করায়, দাইমা। হারিদের মধ্যে একজন ছিলেন যিনি ভোর বেলায় উঠে খঞ্জনি বাজিয়ে গান গাইতে গাইতে চলে যেতেন “আমার দিনগুলো বৃথা গেল, রাত্রি গেল নিভে, হরি দাওহে তব – আপন মনে গেয়ে চলে যেতেন। এই যে খঞ্জনি বাজিয়ে লোকটা গান গেয়ে আমাদের আনন্দ দিত ভোরবেলায়, এই টিম টিম কন্ঠে গাইতে গাইতে তার চলে যাওয়া, এই নিচু শ্রেণির মধ্যে আরো নিচু শ্রেণির লোকটাকে আমি কী চোখে দেখব ?
সেজন্যই বলছি যা মানুষকে উত্তরণ করায়, যা মানুষকে সর্বাগ্রে স্থান দেয় সেটাই মানুষের মহৎ কর্ম এবং আমি যদি বিশ্বাস করি যে, কাল নিরবধি অর্থাৎ কালের শেষ নেই। বিশ্ব বিশাল, নিরবধি, মানুষ আমার স্বজন-তা নির্দিষ্ট করার জন্যই একটা জায়গায় দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হয়; সেখানেই ইতিহাসের দ্বারস্থ হতে হয়।
কাজী রাফির ত্রিমোহিনী ইতিহাস গ্রন্থ নয়। এটা একটা উপন্যাস। কবিতা লিখলেই তা কাব্য হয় না। ইতিহাস আর উপন্যাস এক জিনিস নয়। এই দুয়ের মাঝে এক রসায়ন থাকতে হবে। একটা কেমিস্ট্রি থাকতে হবে। এই সংমিশ্রণকে আলাদা আলাদা করা যাবে না। এই রসায়ন কর্মটা যে করতে পারে না – তার লেখক হওয়া চলে না। যে বাস্তবকে অবাস্তবের সাথে মিলাতে পারে না সে, বাস্তবের পেছনে পরাবাস্তব দেখতে পায় না। যে বাস্তবের পেছনে, গভীরে আরো কত বাস্তব আছে এটা যে দেখতে পায় না, সে বাস্তববাদি লেখক নয়। তার মানে কি এই যে, বাস্তববাদী লেখক হলে আমরা সবাই প্রতিদিন যা দেখছি তাই লিখব? তা লিখলেই হয়। কিন্তু তাতে কি ঔপন্যাসিক হওয়া যায়? সবাই ঔপন্যাসিক হয় না কেন? এজন্য যে, সবাই জীবনের গভীরে বাস্তব-অবাস্তবতার সংমিশ্রণ দেখতে পায় না। চোখের আকৃতি ছোট-বড় দিয়ে সুন্দর বিবেচনা হতে পারে। কিন্তু সাহিত্য বিবেচনা হয় না।
সেজন্যই আমি বলছি, কাজী রাফি যে অবাস্তব কল্পনার জগতে বাস্তব জগত থেকে ইতিহাসের ছায়া এনেছে তা এক মহাকাব্যিকতা পেয়েছে এবংআরো একটি বিষয় সেটা যদি আমি বলি, এটা একটা ছেলে মানুষের কথকথা হবে তা হয়তো-খুব সম্ভবত যে স্থান নদীবহুল এবং যেখানে বন-জংগল সন্নিবেষ্টিত সুন্দর প্রকৃতি আছে সেখানে কথাসাহিত্য জন্মায় না। কথাসাহিত্যের জন্য বিস্তৃত ভূ-খণ্ড, বিস্তৃত জনপদ দরকার। এই বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ সেই এলাকা। সেজন্য আমাদের প্রধান কথাসাহিত্যিকদের প্রায় সবার জন্ম উত্তরবঙ্গে। সে আমি শওকত আলী, সৈয়দ শামসুল হক বা মঞ্জু সরকারই বলি আর ভূবন বিখ্যাত আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের কথাই বলি, তাদের সবাই এই ভূমিতেই জন্মেছে। আমার মনে হয় কথাসাহিত্য হচ্ছে বিশাল জনপদের কাহিনী – আমাদের রাঢ় এলাকা এরকম। হয়তো এর চেয়েও ঊষর। এর চাইতে রুক্ষ¥, অন্যরকম। কিন্তু সেখানে কেউ নিচু কন্ঠে গান গায় না। গানটা এত উঁচু কন্ঠে ধরে যে, গলাটা বিকৃত হয়ে যায়। তবু তাদের কন্ঠ দূর থেকে শোনা যায়। কারণ উঁচু গ্রামে গাইতে গিয়ে তার কন্ঠ চিকন হয়ে যায় এবং বাউলদের গলা যদি আপনি শোনেন, আমাদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বাউলদেও গলাটাও লক্ষ করবেন, খুব চিকন ।
এই যে, বিশাল জনপদ আর ঊষর প্রান্তর, এই ঊষর প্রান্তরই হচ্ছে কথাসাহিত্যের জন্য উর্বর ভূমি এবং এখান থেকে আমরা একটার পর একটা ঔপন্যাসিক পাচ্ছি এই বাংলাদেশে। শওকত আলী, সৈয়দ শামসুল হক, আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস আর এরই ধারাবাহিকতায় এখন পেয়েছি তাদের যোগ্য উত্তরসূরী কাজী রাফিকে। কাজী রাফিকে সহস্র অভিনন্দন। সে ত্রিমোহিনীতে ইতিহাস ব্যবহার করেছে, ইতিহাস নিয়েছে – কিন্তু উপন্যাসে ইতিহাস মেশামেশির যে ব্যাপারটা তা সে খুবই সফলতার সাথে ব্যবহার না করলেও সে ইতিহাস উল্টে দেয়নি, বিকৃত করেনি। ত্রিমোহিনীউপন্যাসে ইতিহাসের যেটুকু বাঁক তা ঔপন্যাসিকের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে। সম্রাট অশোক বঙ্গদেশে এসেছে কি না, ভীম তার গদাটা ছুড়ে ফেলেছে কিনা- এসব ইতিহাস আর পুরানের ব্যাপার। কিন্তু অশোক নামের এক সম্রাটের যে অস্তিত্বই ছিল এটা কবে প্রথম জানা গেছে? আমাদের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আমাদের বঙ্কিমচন্দ্র এরা কেউ-ই কিন্তু অশোকের নাম পর্যন্ত জানতেন না। পরে যদিও জানা গেছে সেটাও ১৯২২ সালের পর।
সেই অশোক পুন্ড্রবর্ধনে এসেছিলেন কি না, আমি যদিও ধরে নিই; তিনি এসেছিলেন – রাজকার্য প্রত্যক্ষ করেছেন, তাহলে অসুবিধা কোথায়? হ্যাঁ, অশোকের এখানে একবার পায়ের ধুলা পড়েছে। গৌতম বুদ্ধের একবার পায়ের ধুলা পড়েছিল। পুন্ড্রবর্ধন – বলা যায় এই সভ্যতার একেবারে প্রাণকেন্দ্র ছিল। এটা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, বিশাল বিশাল সভ্যতার উত্থান এবং অবক্ষয় দুই-ই এই মহাস্থান গড়ে হয়েছে। কাজেই এর যে ইতিহাস-এই ইতিহাসকে অবলম্বন করে উপন্যাসসহ আরো অনেক অনেক কিছু রচিত হতে পারে। রচিত হয়েছেও অনেক। গ্রাম-বাংলার লোকের মুখে মুখে তা চালু আছে। যেমন বেহুলার গান, বৈষ্ণব গান। কাজী রাফি ত্রিমোহিনী উপন্যাসে সেরকম ইতিহাসের ছায়া এনেছে, যার সঙ্গে যোগ করেছে রসের মেশাল। সাহিত্যের মেশাল। ফলে সেটা সত্যের চাইতে সত্যতর, ধ্রুবের চাইতে ধ্রুবতর – এটা মনে রাখতে হবে।
আমি এই উপন্যাসটি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। ভালো লেগেছে। এর পথ এবং প্রশস্ত রাজপথ এবং রাজপথ থেকে বেরিয়ে পুনরায় এত অসংখ্য অলিগলি পথ-কাজেই একটু ধন্ধে পড়তে হতে পারে। কারণ নানাদিকে উপন্যাসটির বিস্তৃতি। আমি অস্ট্রেলিয়ায় একবার একটা বই পেয়েছিলাম। বইটার নাম ছিল Hundred and fifty walkways in Australia, থালার মতো দেশ তো, কিনারে সব শহর, মাঝখানে কিছু নাই, সব ফাঁকা। এখানকার পুরনো আদিবাসি যারা আমাদের পূর্বপুরুষ তারা এখনো থাকে। তবে ঘেরাও অবস্থায় থাকে। কিন্তু এখানকার সাধারণ হবি (শখ) হচ্ছে যে, ঐসব কাঁচা পথে বন-জংগলের ভেতর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করা। ১৫০টা walkways-এর তথ্য বইটা দেয়। ত্রিমোহিনী যদি পড়া যায় তাহলে বুঝব এটা শুধু তিন মোহিনী নয় অথবা এর তিন মাথা এক জায়গায় নয়। এ হলো অজস্র মাথা। কাজী রাফির সৃষ্ট এই জগতে পথ হারিয়ে ফেলতে হয়। আর এতে এমন স্বাদ দেওয়া আছে, এমন বর দেওয়া আছে, এর এক মাথা কাটলে সংগে সংগে আর একটা মাথা তৈরি হয়ে যাবে। অর্থাৎ বইটা জীবিত থাকবে। বইটা কোনোদিন মরবে না। এই বইটা মরবে না।
আমি এজন্য সাহিত্য জগতে তাকে আমন্ত্রণ জানাই। সে লিখুক। আরো মহৎ সাহিত্য সে সৃষ্টি করুক। পৃথিবীর সাহিত্যে সে জায়গা করে নিক। তাতে আমাদের অহংকার বাড়বে বৈ কমবে না। জায়গা করে নিক সে পৃথিবীর সাহিত্যে। এই বইয়ের অনুবাদ হোক। এই বই সারা পৃথিবীতে জানান দিক যে, খুব বড় করে কল্পনা করার, ইতিহাসকে বড় করে তোলার মতো ঔপন্যাসিক আমাদেরও আছে। যে ইতিহাস বিবরণ তথ্যে নয়, ইতিহাস আর সাহিত্যের মধ্যে যে তফাৎ (তা ধারণ করে)। ইতিহাসের জগত তথ্যে পরিপূর্ণ। সাহিত্যের জগত মনুষ্য দ্বারা পরিপূর্ণ, সাহিত্য জগতের সর্বত্র শুধু মনুষ্য আর মনুষ্যত্ব। এর চেয়ে অধিকতর বড় কিছু নাই, এটাকে আমরা ধ্রুব বলে মানি – আমরা যাই-ই পড়ি না কেন, তা আধ্যাত্মিকতা অথবা সাহিত্য হোক তা শেষ পর্যন্ত মানুষেরই কাজে লাগে। একটা গরু বা ছাগলের আধ্যাত্মিকতা নেই। স্রষ্টা তা তাদের দেননি। আমাদের সবই আছে। কেন? কারণ আমরা মানুষ। আমরা চিন্তা এবং কল্পনা এভাবে করতে পারি এবং সেই চিন্তা এবং কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করতে পারি।
আজকে বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি তা হয়তো সুখকর নয়। আমরা মনে করছি দেশটা রসাতলে যাচ্ছে নাকি? দেশটা কি রসাতলে যাচ্ছে? প্রত্যেক দিনে হিসাব করলে সেরকমই মনে হয়। কিন্তু একবার কাজী রাফির মতো লেখক যদি পাওয়া যায় তাহলে মনে হয়, না এখনো আছে (সবকিছু ফুরিয়ে যায়নি) এ..খ..নো আছে। পরশুরামের এক গল্পে আছে যে, একজন নাস্তিক আর আস্তিক দুই বন্ধু তাদের পরস্পর খুব ঝগড়া লাগত। একজন বলতো, ঈশ্বর নাই আর একজন বলতো ঈশ্বর আছে। একদিন নাস্তিকের মৃত্যু হলে তার পিছু পিছু যখন আস্তিকরা যাচ্ছে তখন নাস্তিক তার খাটের উপর থেকে হঠাৎ দাঁড়িয়ে বলছে – “আছে, আছে, সব আছে। অর্থাৎ নাস্তিক বলছে, আছে। সব আছে।
আমরাও মনে করি (ভূষণ্ডির কাক হয়ে) সব ভালো থাকুক। জীবিত ও মৃত; সব হাজির থাকুক। মৃতও জীবিত হোক। জীবন্মৃতও পূর্ণ জীবন লাভ করুক। এই সাহিত্যের কাছেই এটা সম্ভব। আর কোনো কিছুতে, কোথাও সেটা সম্ভব নয়। ত্রিমোহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এটাই যে, তা মনুষ্যত্বকে বুকে ধারণ করে। এই সভ্যতা শুধু অট্টালিকা বা মাটির নিচে চাপা থাকা ভস্ম-ভগ্ন (কোনো ইতিহাস শুধু) নয়, এটা মনুষ্যত্ব জগতে পরিপূর্ণ এবং সেই মানুষ, যে সকলের মধ্যে অমর, A human being, a mortal man। যে মাঝখানে নয়, সকলের সাথে এক; সেই-ই হচ্ছে অসাধারণ ব্যক্তি। অসাধারণ কে? সবচাইতে সাধারণ যে ব্যক্তি। সকলের সাধারণ গুণগুলোকে যে হজম করে বসে আছে সেই-ই হচ্ছে সত্যিকারের অসাধারণ মানুষ-যার মধ্যে ষড়রিপু আছে, যার মধ্যে কাম-ক্রোধ-হিংসা, লোভ-মোহ আছে, আছে যার মৃত্যু।
মেঘ বলেছে যাব যাব। চলে যাব সবাই। কিন্তু “তোমার কাছে এবার আমি মরণ হতে যেন জানি-গানের সুরে’।ত্রিমোহিনী সেরকম এক উপন্যাস। মহামূল্যবান সম্পদ এই বইটি। এ যখন হাকবে, এ যখন ডাকবে আপনার অত্যন্ত দুর্লভ, সঙ্কটাপন্ন অথবা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক মুহুর্তে, আপনি দেখবেন আপনাকে শান্তনার প্রলেপ দেবে গ্রন্থটি। সাহিত্য মানুষকে কল্পনাময় শান্ততার স্থানে নিয়ে যায়-কাজী রাফির এই গ্রন্থটি আমাদের সেরকম একটি জায়গায় নিয়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশের সাহিত্য পুষ্ট হচ্ছে। অনেকেই ভালো লিখছে। মানুষের গল্প অফুরান। মানুষের গল্প কোনোদিন শেষ হবে না। কাজী রাফির সৃষ্টিতে, তার লেখনিতে, তার গল্প-উপন্যাসে মানুষের এই অফুরান গল্প তাদের প্রেম-ভালোবাসা হয়ে, তাদের স্বদেশভূমি হয়ে, তার স্বপ্ন-কল্পনার উপাখ্যান হয়ে একদিন ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীময়-এই প্রত্যাশা। আপনারা সকলেই ভালো থাকুন।